আদর্শের ভরাডুবি ফেমিনিজম


 [১] গোড়ায় গলদ ও ‘সম’ সংশয়
Feminism এর সংজ্ঞায়নে স্বয়ং ফেমিনিস্টরা নিজেরাই এত মত পথ বের করেছে যে তাদেরকে সংজ্ঞা জিজ্ঞেস করলে একেকজন একেকরকম উত্তর দেয়। বিশেষ করে ফেমিনিজমের পুরনো সংজ্ঞা যা মূলত ‘নারীদের সমঅধিকার’ কেন্দ্রিক - সেটাকে যুক্তিতর্ক দিয়ে এতই পচানো হয়েছে যে স্বয়ং ফেমিনিস্টরাই ‘ফেমিনিজমের সংজ্ঞা নতুনভাবে ঢেলে সাজাতে বাধ্য হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে এসেছে Neo-Feminism. আর যদিও বাঙ্গাল ফেমিনিস্টদের বেশিরভাগই এখনও এতদূর যায় নি, তবুও শেষে Neo-Femisnism সম্পর্কেও প্রয়োজনীয় আলোচনা থাকবে ইন-শা-আল্লাহ। কারণ ইন্টারনেট-স্মার্টফোনের যুগে ইতোমধ্যেই Neo-Femisnism এর বাতাসে কেউ কেউ অসুস্থ হয়েছে আর কিছুদিনের মধ্যেই যে তা পুরোদমে মহামারীতে রূপ নেবে তাও মোটামোটি নিশ্চিত।
.
যাই হোক, প্রথমে আভিধানিক সংজ্ঞাতেই চোখ বুলানো যাক। Oxford ডিকশনারীর সংজ্ঞা অনুযায়ী Feminism হল, “The advocacy of women's rights on the ground of the equality of the sexes.” আর Caombridge এর সংজ্ঞা হল “the belief that women should be allowed the same rights, power, and opportunities as men and be treated in the same way, or the set of activities intended to achieve this state:”
.
অর্থাৎ, ফেমিনিজম গড়েই উঠেছে নারীদের ‘সম’ অধিকার প্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে। লক্ষ্যণীয়, এখানে আগেই ধরে নেওয়া হয়েছে যে ‘সম’ মানেই হল ‘সঠিক’। আসলে কি তাই? নারী-পুরুষ সব জায়গায় সমান সমানভাবে থাকবে, সব জায়গায় সমান সমান অধিকার ভোগ করবে সেটাই কি ন্যায়? আদতে বাস-ট্রাক চালানো, গলা ফাটিয়ে হেল্পারি করাসহ ভারী ভারী যত কাজ রয়েছে - সেসব বিষয় সামনে নিয়ে এলে ফেমিনিস্টদের তোলা ‘সম’ অধিকারের আস্ফালন আর শোনা যায় না। কেবল অফিস-আদালতে এসির বাতাস খেতে খেতে ভাবমারা কর্পোরেট জব করার সময় সমধিকারের যত বুলি আওড়ানো হয়।
.
একটা উদাহরণ দেওয়া যাক, একটা কন্সট্রাকশন সাইটে কাজের জন্য দিন-মজুর নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। সেখানে লাইনে কিছু পুরুষ আর মহিলা দাঁড়ালো। লোক নিয়োগ শেষে দেখা গেল, পুরুষ বেশি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে আর মহিলা কম। মহিলাদের যেসব কাজ দেওয়া হয়েছে তাও অপেক্ষাকৃত কম কষ্টের, মজুরিও নির্ধারণ করা হয়েছে সে অনুযায়ী। এখন ফেমিনিস্টদের অবস্থা হল এমন - তারা দাবি করছে তারাও পুরুষদের সমান সংখ্যায় কাজ করবে, আর একই সময় পরিমাণ কাজ করার পরিবর্তে তাদেরকে একই পরিমাণ মজুরি দিতে হবে। এই হল তাদের সংজ্ঞার ‘সমঅধিকারের’ প্রায়োগিক রূপ। অথচ তারা নিজেরাও জানে একাজে তারা চাইলেও পুরুষদের সমান আউটপুট দিতে পারবে না। বাস্তবতা হল এই যে, কিছু কাজ রয়েছে যা পুরুষদের জন্য, আবার কিছু কাজ রয়েছে যা মহিলাদের জন্য। স্বয়ং আল্লাহর নির্ধারণ করে দেওয়া এই বাস্তবতাকে যারা স্বাভাবিকভাবে নিতে পারে না, নিজেদের এই ফিতরাতবোধ যারা নষ্ট করে ফেলেছে তারাই সম অধিকারের অসাড় আস্ফালন করে থাকে। তাই নারীবাদীরা যতদ্রুত সত্য মেনে নিতে পারবে, ততই তাদের মঙ্গল। আর ‘সম’ মানেই সত্য নয়, সঠিক নয়। বরং যে যেখানে উপযুক্ত সেখানেই সে সঠিক, সত্য।
.
 [২] The Gender Wage Gap Myth
এবার আসা যাক, ফেমিনিস্টদের ব্যবহৃত এক কল্পনাপ্রসূত অসাড় যুক্তিতে আর তা হল Gender Wage Gap বা চাকরি বাকরিতে ‘বেতন বৈষম্য’। অর্থাৎ, ভারী সব কাজ বাদ দিয়ে ফেমিনিস্টরা যেসব জায়গায় নিজেদের ক্যারিয়ার গড়তে চায় সেখানে তারা নাকি তারা অধিকার(!) আর বেতন বৈষম্যের শিকার হয়। খতিয়ে দেখা যাক। (ইসলামের দৃষ্টিকোণ কিছুক্ষণ পরে আলোচিত হবে, প্রথমে সেক্যুলার দৃষ্টিকোণ থেকেই আলোচিত হল)
 .
আমেরিকায় করা বিভিন্ন জরিপ অনুযায়ী তথাকথিত বেতন-বৈষম্যের পরিমাণ ২৩ পার্সেন্ট। অর্থাৎ, প্রতি একজন কর্মজীবী সাধারণ পুরুষ ১০০ ডলার আয় করলে প্রতি একজন কর্মজীবী সাধারণ নারী আয় করে ৭৭ ডলার। নিও-ফেমিনিস্টদেরকে প্রায় সবসময়ই এইধরনের মুখস্ত তথ্য ব্যবহার করতে দেখা যায়। অথচ একইসাথে এসব জরিপ আর রিসার্চে উল্লেখিত Wage Gap এর যেসমস্ত কারণগুলো উল্লেখ করা হয় সেগুলো আর বলতে শোনা যায় না। বাস্তবতা হল, পুরুষ আর নারীদের Wage Gap এর পিছনে কিছু ফ্যাক্টর কাজ করে যার প্রথমেই রয়েছে নারীদের Choice. এমনকি American Association of University Women, যা কিনা একটা ফেমিনিস্ট সংস্থা, এর দেওয়া রিপোর্টেও বলা হয়েছে বিদ্যমান এই Wage Gap বা বেতন বৈষম্যের প্রধান কারণগুলো হল পেশা, পদবি, শিক্ষাগত যোগ্যতা, কাজের ঘণ্টা ইত্যাদির ক্ষেত্রে পুরুষ আর নারীর ভিন্ন ভিন্ন পছন্দ। (১) সেখানে বলা হয়েছে, নারীরা নিজেরাই পড়ালেখা করার সময় এমনসব বিষয়াদি বেছে নেয় যার বাজারমূল্য কম আর তাছাড়া কর্মক্ষেত্রেও তাদের পদবি, দায়িত্ব, সংসারের জন্য ওভারটাইম না করা ইত্যাদি কারণে এমন বেতন-ফারাক সৃষ্টি হয়েছে যা অতি স্বাভাবিক।
.
আর এই বিভিন্ন ফ্যাক্টরগুলো বিবেচনা করলে Wage Gap এসে দাঁড়ায় মাত্র ৬.৬% এ. আর এরও কারণ শুধুমাত্র নারী-পুরুষের পছন্দ করে নেওয়ার বিভিন্নতা। একজন নারী তাঁর সংসার সামলানোর জন্য যেখানে তাড়াতাড়ি ঘরে ফিরতে উদ্যত হন, সেখানে একজন পুরুষ সেই সংসারের জন্যই ওভারটাইম কাজ করতেও দ্বিধা করেন না। অর্থাৎ, Individual Career Choice এর বিভিন্নতার কারণেই এই Gap সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এইকথাগুলো কিন্তু ফেমিনিস্টদের একদমই পছন্দ না। ২০০৯ সালে U.S. Department of Labour এর পাবলিশ করা ‘An Analysis of Reasons for the Disparity in Wages Between Men and Women’ রিপোর্টেও একই তথ্য পাওয়া গিয়েছিল যা কিনা ৫০ টিরও বেশি Peer Review Study থেকে নিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। সেখানেও বলা হয়েছে বিদ্যমান Wage Gap এর ক্ষেত্রে পার্সোনাল চয়েস বিবেচনা করলে রীতিমত কোনো গ্যাপই আর বিবেচ্য থাকে না। সেগুলো নিয়ে আন্দোলন আর উচ্চবাচ্য করা তো হাস্যকর ব্যাপার। (২)
বাস্তবে দেখা যায়, দুইজন পুরুষ সমপোস্টে সমান সমান শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে কাজ করলেও একজনের আগে আগে পদোন্নতি হয়ে যায়। এটা অতি স্বাভাবিক একটা বিষয়। কর্মক্ষেত্রে পারফরমেন্স অনুযায়ী ইভালুয়েশন হয়। এখন নিজেদের Choice এর কারণে অল্প আউটপুট দিয়েও যদি কিছু অপদার্থ একই পরিমাণ বেতন দাবি করে তা তো বোকামি আর অন্যায় দাবি ছাড়া কিছু নয়। তাছাড়া
.
 >> যদি একই পরিমাণ আউটপুট দিয়েও নারীদের বেতন কম হতো তাহলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আর ইন্ডাস্ট্রিগুলো একই পোস্টে সব পুরুষ বদলে নারী বসায় না কেন? খরচ বাঁচানো ব্যবসাগুলোর একটা অন্যতম লক্ষ্য আর যেহেতু একইকাজে সব নারী নিয়োগ দিলে প্রতি ১০০ ডলারে ৬.৬ ডলার বেঁচে যায়, তাহলে কেন তারা সব নারী নিয়োগ দিয়ে খরচ কমিয়ে ফেলছে না? আদতে বাস্তবতা হল, বেশি অর্থ দিয়ে হলেও যোগ্যদেরকেই কাজ দেওয়া হয়। এখন অযোগ্য কেউ এসে যোগ্যদের সমান সমান সবকিছু পেতে চাইলেই তা ন্যায় হয়ে যায় না, বরং চরম অন্যায় হয়।
.
 >> একটা প্রতিষ্ঠানের কোন পোস্টে কাকে নিয়োগ দেওয়া হবে, কত বেতন দেওয়া হবে সেগুলো অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ব্যাপার। যাদেরকে যোগ্য মনে করা হয়, তাদেরকেই নিয়োগ দেওয়া হয় আর যত বেতনের যোগ্য মনে করা হয় তত বেতনেই নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রতিযোগিতার এই যুগে অযোগ্যরা যোগ্যদের জায়গা দখল করে বেতন ভোগ করতে থাকলে সব ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান আর অর্থনীতির বিপর্যয় ঘটবে এতো ক্লাস ফাইভের বাচ্চারাও বোঝে।
.
একে তো ফেমিনিস্টদের ‘সম মানেই সঠিক’ এই রেথোরিকেই রয়েছে গলদ এর উপর সমস্ত রিপোর্টের তথ্যও যায় তাদের বিপরীত। একই রিপোর্টের একাংশ নিজেদের প্রয়োজনানুযায়ী ব্যবহার করে কারণগুলো লুকিয়ে লাফালাফি আর আন্দোলন করা অপরিণত মস্তিষ্কের পরিচয়ই বহন করে।
.
 [৩] ইসলামের দৃষ্টিতে ফেমিনিজম
অনেকে ফেমিনিজম বলতে নারীর অধিকার নিশ্চিত করা পর্যন্তই বোঝে। আর ইসলাম যেহেতু নারীকে সম্মানিত করেছে, তাই ‘ইসলাম একটা ফেমিনিস্ট ধর্ম’ বলে বলে প্রচার করতে থাকে। আদতে তারা ফেমিনিজমের মূলকথা বোঝে নি, আর ফেমিনিজমকে ভাল টাইপের কোনো আদর্শ বলে মনে করে। এই ধারণা পুরোপুরি ভুল ও মিথ্যা। আসল কথা হল, ইসলামে নারীর যে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে এরপরেও যে অন্যকোনো আদর্শে খায়ের বা কল্যাণ খুঁজে সে প্রকাশ্যে বা গোপনে ধরে নেয় যে আল্লাহ রব্বুল আ’লামীন নারীদের যথেষ্ট সম্মান দেয় নি। নাউযুবিল্লাহ।
.
আল্লাহ রব্বুল আ’লামীন বলেন তাঁর সৃষ্টি সম্পর্কে সম্যক অবগত আর তিনি তাঁর পুরুষ বান্দাদের জন্য নারীদের উপর কর্তৃত্ব আর কর্তব্য নির্ধারণ করেছেন আর নারী বান্দীদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যথাযথ পর্দা করতে, প্রয়োজন ব্যতীত ঘরে থাকতে ও স্বামীর আনুগত্য করতে। এখন কেউ আল্লাহ রব্বুল আ’লামীনের দেওয়া নির্দেশ মেনে নিবে, অথবা অস্বীকার করবে। দু’টো একসাথে চলতে পারে না।
.
 "ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।" (সূরা নূর, ৩১)
 .
পুরুষদের জন্যও চোখ হিফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ঠিক আগের আয়াতেই।
.
 "মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।" (সূরা নূর, ৩০)
 .
অর্থাৎ নারী-পুরুষ একইসাথে নিজেদের দিক থেকে নিজেদের দায়িত্ব পালন করবে। আল্লাহ রব্বুল আ’লামীন দুইজনের দিক থেকেই সম্পূর্ণ বিধান দিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু কোন ধর্ষণ বা এমন ঘটনা ঘটলে দেখা যায় একদল চিৎকার করছে ‘পুরুষদের দৃষ্টি ঠিক করতে বলো’ আর আরেকদল বলছে ‘আগে নারীদের পর্দা করতে বলো’ বলে চিৎকার করছে। অথচ দুইটা একইসাথে দুইদিক থেকেই হওয়া উচিত, যেমনটা আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন। অবে বাস্তবতা হল এই যে, যথার্থ হিজাব করা নারীদের দিকে খুব কম পুরুষই চোখ তুলে তাকায়। একেবারে জানোয়ার গোছের পুরুষ ছাড়া সাধারণত এমনটা হয় না। তাই নারীদের জন্য ফরজ পর্দা নারীরা যথার্থভাবে করা শুরু করলে অতি তাড়াতাড়িই একটা সমাজ নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে পারে, কিন্তু কেউ সামনে উলঙ্গ হয়ে ঘুরবে আর সেদিকে কেউ তাকাবে না; এমনটা অলীক কল্পনা ছাড়া কিছু না।
.
যাই হোক, সূরা নূরের ৩০ নং আয়াত নারীদের বিনা প্রয়োজনে বাহিরে না যাবার দিকটা স্পষ্ট করে। অথচ আজ আমাদের সমাজে হিজাব করা বোনেরাও সুঠাম ক্যারিয়ার গড়তে চায়। আসলে তাদের যে দ্বীন অন্তরে প্রবেশ করে নাই, কেবল আবরণেই এসেছে তা সুস্পষ্ট। তাদের ভরণপোষণ থেকে শুরু করে সমস্ত কিছুর দায়িত্ব তো পুরুষদের দেওয়া হয়েছে, তবুও এতো লাফালাফি কেন?
 .
 "পুরুষেরা নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন..." (সূরা নিসা, ৩৪)
 .
এই হল আল্লাহ রব্বুল আ’লামীনের আয়াত - তিনি একজনকে আরেকজনের উপর বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করেছেন, আর একারণেই পুরুষদেরকে করেছেন কর্তৃত্বশীল। তাহলে কীভাবে একজন নারী একইসাথে আল্লাহর কিতাবে বিশ্বাস স্থাপনের কথা বলতে পারে, আবার শরীয়তসম্মত কারণ ছাড়া পিতা-স্বামীর অবাধ্য হতে পারে? প্রকৃতপক্ষে ‘ইসলামী ফেমিনিস্ট’ একটা Oxymoron ছাড়া কিছুই না।
.
 [৪] আখিরাতের হিসেব
কোনোকিছুই মূল্য ছাড়া আসে না। আর পুরুষদেরকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেটাও চরম মূল্য ছাড়া আসে নাই। আর সেই মূল্য হল, আখিরাতে আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতা। দায়িত্বের মধ্যে থাকা নারীদের প্রতি সুবিচার না করলে, সঠিক দ্বীনের শিক্ষা না দিলে, বেহায়াপনা করতে দিলে আখিরাতে দাইয়্যুস হয়ে বা গুনাহগার হয়ে একজন পুরুষকে যে চরম মূল্য দিতে হবে - সেসব কথা কিন্তু ফেমিনিস্টরা এড়িয়ে যায়। তারা শুধু দুনিয়াতে তাদের উপর কর্তৃত্ব দেওয়ার ব্যাপারগুলোই বলে যায়। অথচ আখিরাতের হিসাব ছাড়া সবকিছুই অপূর্ণ। এছাড়া স্বয়ং আল্লাহর দেওয়া বিধান নিয়ে প্রশ্ন করা তো শয়তানের চরম ধোঁকা।
.
তাছাড়াও নফল রোযা রাখতে স্বামীর অনুমতির হাদিস – কারণ আল্লাহ পুরুষদের কামনা-বাসনা বেশি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন ইত্যাদি যারা অস্বীকার করতে চায় তারা আসলে আল্লাহর দেওয়া ফিতরাতকেই অস্বীকারের মাধ্যমে দ্বীন থেকেই নিজের অজান্তে বেরিয়ে পড়ে। অথচ একজন নেক নারী মা হলে সেই মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত, তাদের জন্য যে মাত্র কয়েকটি বিষয় ঠিক করলেই নিশ্চিত জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে, হাজ্জ করে আব্রু রক্ষা করে চলতে পারলে তা জিহাদের সমতুল্য করা হয়েছে সেসব কথা কিন্তু অব্যক্তই থেকে যায়। মোটকথা আখিরাতের পুরস্কারগুলোর কথা বাদ দিয়ে যখন কেবল দুনিয়ার সুযোগসুবিধা নিয়ে আলোচনা করা হয়, তখন তারা হিসেব মিলাতে পারে না। আর তখনই শয়তানের ওয়াসওয়াসার জন্য তাদের অন্তর উন্মুক্ত হয়ে যায়। ফলাফলস্বরূপ তারা ধাবিত হয় ফেমিনিজম আর সমঘরানার ফালতু আদর্শে।
.
আল্লাহ রব্বুল আ’লামীন ভাল কাজে প্রতিযোগিতা করে এগিয়ে যেতে বলেছিলেন, আর সেখানে ইসলামের বেশ ধরেও অন্তরে ইসলামবিদ্বেষ পোষণ করে ফেমিনিস্ট হয়ে কিছু মানুষ নিজেদের জাহান্নাম খরিদ করছে। একারণেই আজ শতকোটি পুরুষদেরকেও লজ্জা দেওয়া নুসাইরা বিনতে কা’বদের আর দেখা যায় না। রদিআল্লাহু আ’নহা। আল্লাহ আমাদের সহীহ বুঝ দান করুন এবং ইসলামভিন্ন অন্যসব আদর্শের ধোঁকা থেকে ভাই ও বোনদের হিফাজত করুন।
.
 (১) https://tinyurl.com/cwssb8w
(২) https://tinyurl.com/y6vvzm4v
 .
লিখাটি আপাতত অসম্পূর্ণ। পরবর্তীতে পূর্ণ করে নোট লিখব ইন-শা-আল্লাহ।


written by: Tanvir Ahmed
thanked by: Tanvir Hossain

Comments

Popular posts from this blog

L’uomo Che Aveva Paura del Genere Umano (Riassunto)

বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্র -ছাত্রীরা

Marriage Advices to You All (by_Tanvir_Sci)